Powered By Blogger

Tuesday, May 5, 2020

MILAM GLACIER / JOHAR VALLEY TREK VLOG - PART 2

Saturday, April 18, 2020

SINGALILA / SINGALI-LA TREK VLOG - PART 4 | PHALUT/PHALUT TOP TO GORKHEY...

Tuesday, April 14, 2020

SINGALILA / SINGALI-LA TREK VLOG - PART 3 | KALIJHAR - SIGALILA TOP TO P...

Tuesday, April 7, 2020

SINGALI LA TREK BLOG 2019

সিঙ্গালি লা ট্রেক  | SINGALI LA TREK

APRIL 2019



ট্রেক মঙ্গার্স দলের সদস্যরা:  বিশ্বরূপ, চিন্ময় দা, ইন্দ্র, মাধব, সান্তনু দা এবং তীর্থ ।

গাইড - নিমা শেরপা


সিঙ্গালি লা বা সিঙ্গালি লা জাতীয় উদ্যান উত্তর বঙ্গ আর সিকিম হিমালয় জুড়ে অবস্থিত। বিখ্যাত সান্দাক ফু ট্রেক যা কিনা আমাদের মতো বেশির ভাগ ট্রেকারের ই পায়ে খড়ি, সেটি ও এই অংশের মধ্যেই পরে। সিঙ্গালি লা অর্থাত সিঙ্গালি PASS এর নামেই এই নামকরণ। আমার্ ২০০৫ এর সান্দাকফু ট্রেক এর মাধ্যমেই এই অংশের সাথে পরিচয় ঘটে। দীর্ঘ ১৪ বছর পরে আবার সেই পথে গিয়ে কি দেখলাম সেই অভিজ্ঞতার গল্পই শোনাবো এবার আপনাদের।


SLEEPING BUDDHA 


২১-০৪-২০১৯:

রাত ১১:২০ পদাতিক এক্সপ্রেস এ চেপে বসলাম দলের ৫ সদস্য। সান্তনু দা অন্য্ ট্রেন এ সোজা NJP  তে যোগ দেবে। মোট ৬ জনের দল, চলেছি সিঙ্গালি লা জাতীয় উদ্যান ট্রেক এ। রাত্রে ট্রেন এ বিশেষ কিছু ঘটনা নেই বলার মোত। একটু আড্ডা আর কয়েকটা দলস্বী ছবি তুলে ঘুম দিলাম।  সকালে  ঘুম ভাঙবে উত্তর বঙ্গে।
ট্রেন এর গ্রুপ ছবি 



২২-০৪-২০১৯:

ট্রেন পরের দিন প্রায় সময় মতোই নামিয়ে দিলো NJP তে।  সান্তনু দার ট্রেল লেট্ করেছে।  আমরা তাড়াতাড়ি একটা খাবার দোকানে ঢুকে আলু পরোটা আর টকদই সহযোগে প্রাতরাশ সেরে নিলাম। সান্তনু দা তার মধ্যেই চলে এলো আর ঝটপট খেয়ে নিলো। আমরা খেতে  ঢোকার আগেই গাড়ির সাথে কথা বলে রেখেছি। খাওয়া সেরেই মালপত্র গাড়িতে তুলে ১১টার মধ্যেই রওনা দিলাম উত্তারে গ্রামের উদ্যেশ্যে।  লম্বা পথ, তাই দেরি করলেই মুশকিল হয়ে যাবে! বেলা ১২টা নাগাদ করোনেশন ব্রিজ কে পাশে ছেড়ে এগিয়ে চললাম। পথে একবার চা পানের বিরতির পর কালুকে কিছু খেয়ে নেবার জন্য যখন গাড়ি থামালাম তখন বিকাল ৪:৩০ বাজে।  তাড়াতাড়ি কিছু মোমো খেয়ে আবার রওনা দিলাম। এদিকে রাস্তায় কুয়াশা নেমে এসেছে। গাড়ি খুব জোরে চালানো ও সম্ভব হচ্ছে না! ঠিক সন্ধ্যা ৬:১৫ তে আমরা উত্তারে পৌঁছে গেলাম। আমাদের গাইড নিমা শেরপা আগে থেকেই থাকার জন্য একটা জায়গা ঠিক করে রেখে দিয়েছিলেন। তাই সেই ঝকমারি তা আর আমাদের পোয়াতে হলো না! ঘরে ঢুকে নিমা জি কে আমাদের PHOTO ID এবং ২ টি করে ছবি দিয়ে দিতে হলো অনুমতি পত্র তৈরী করার জন্য। উত্তারে তে রাতের দিকে আমরা একটু ঘুরতে বেরোলাম। নিস্তব্ধ অন্ধকার গ্রাম। শুধু এখানে ওখানে কুকুর গুলো চেচাচ্ছে। একটু দূরেই TROUT মাছের চাষ হয়, কিন্তু এখন অন্ধকারে কিছুই দেখা যাবে না! খানিক পরে আবার হোটেলে ফিরলাম। খিদেও পেয়েছে, আর গরম খাবার ও তৈরী। ভাত, রাই শাক, মেটে আলুর তরকারি, সব্জি, ওমলেট, পাঁপড়, আচার সহযোগে এলাহী খাবার খেয়ে লেপের তলায় ঢুকে পড়লাম। আগামী কাল থেকে হাঁটা শুরু হবে আমাদের।

NJP তে নেমে 

স্টেশন এর বাইরে Breakfast 

NJP থেকে গাড়ি ছাড়ার আগে 

কালুক এ মোমো দিয়ে Lunch 

কালুক এ কুয়াশা নেমে এলো 


নিমা জি কে অনুমতি পত্রের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ
পত্র আর ছবি দিয়ে দেওয়া হলো 


২৩-০৪-২০১৯:

রাত্রে সকলের নাক ডাকার ঐকতানে অসাধারণ ঘুম হোলো! ঘুম থেকে উঠেই ধূমায়িত চা পেয়ে গেলাম। চা খেতে খেতে জানালা দিয়ে সকালের উত্তারে কে দেখে উৎসাহ বেড়ে গেলো মনে! ঝলমল করছে রোদ, স্নিগধ আকাশ আর রঙিন উত্তারে গ্রাম। প্রাতঃক্রিয়া সেরে তৈরী হয়ে নিলাম। BREAKFAST ও তৈরী। SACK তৈরী করে নিচে এলাম DINING HALL এ প্রাতরাশ সেরে নিতে। রুটি, আলুর তরকারি আর আচার দিয়ে ভালোই খাওয়া হলো।  খেয়ে বেরিয়ে দেখি আমাদের তাঁবু আর খাবার দাবার 'জো' দেড় পিঠে বাঁধা প্রায় হয়েগেছে। এবার রওনা দিলেই হয়। ঠিক ১০:৩০ এ আমরা দুগ্গা দুগ্গা বলে হাঁটা শুরু করলাম। আজ আমরা যাবো আচালে দারা বা আচালে TOP এ।  আমাদের হোটেল এর সামনেই জাহাজের আকারের একটা হোটেল এর পাশ দিয়ে চলে সামনের পাহাড় টার ওপরে চড়াই উঠতে শুরু করলাম। খানিকটা উঠেই একটা সমতল জায়গা পেলাম। নাম গুম্ফা দারা। এই স্থানে গ্রামের সবাই বছরের বিশেষ সময়ে উৎসব পালন করেন। পাশেই একটি গুম্ফা থাকার কারণেই এই নাম।  আবার চলা শুরু করলাম। প্রথম দিকের অনেক তা পথই গ্রামের ভিতর দিয়েই। হাঁটি আর রাস্তার পাশে হয়ে থাকা Wild Strawberry ছিঁড়ে খাই।  এই ভাবে ওপরের দিকে উঠতে থাকলাম বেশ অনেকক্ষন ধরেই। প্রায় ১ ঘন্টা ১০ মিনিট হেঁটে পৌঁছে গেলাম 'তেনজিং হিলারী' পার্ক এ। সুন্দর বানিয়েছে সিকিম সরকার স্থান টি! দুজনের বিশালকায় মূর্তি বানানো রয়েছে পার্ক এর ওপরে। সেখানে খানিক্ষন সময় কাটিয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম। এর পর আর লোকালয় তেমন নেই।  এবার জঙ্গল শুরু হোলো। ওই পার্ক এর থেকে আচালে ৪ কিঃমিঃ পথ। আগের দিনে বৃষ্টি হবার জন্য জঙ্গলের পথ পুরো কাদায় ভরা। কোনো রকমে পাশের শুকনো জায়গায় পা রেখে চলতে থাকলাম। কোথাও কোথাও কাদা বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না, আর জুতোর sole কাদায় ভারী হয়ে উঠছে। তার ওপর এরকম পরিবেশে জোঁকের উপদ্রব অনেক বেশি! ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা জোঁকেদের বিশেষ পছন্দ। বেশিরভাগ সময় তারা গাছের ওপর থেকেই গায় এসে পড়ে! দোল বেঁধে চললে তাই একটু দূরত্ব রেখে হাঁটতে হয়। কারণ এরা প্রথম জনের পায়ের কম্পন অনুভব করে সতর্ক হয়, দ্বিতীয় জনের পায়ের শব্দে নিজেকে তৈরী করে গাছের পাতা ছেড়ে খসে পড়ার জন্য, আর তৃতীয় জনের উপর টুপ্ করে খসে পরে আর সঠিন স্থান দেখে রক্ত টানতে শুরু করেদেয়! তাই একটু দূরত্ব রেখে হাঁটলে এই উপদ্রব এড়ানো যেতে পারে। জঙ্গলে বিরাট বিরাট মহীরুহ রাজি ধ্যানগম্ভীর ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।  কোনো কোনো টার আয়তন এত বড়ো, যে তার ফোকোরের ভিতরে অনায়াসে এক-দু জন মানুষ আশ্রয় নিয়ে নিতে পারে!

ক্রমশ জঙ্গল আরও গভীর হতে থাকে আর আলো কম হতে থাকে গাছের ঘনত্বের জন্য। আবার খানিকটা চড়াই ভেঙে বেলা ১:৪৫ নাগাদ  আমরা উঠে আসি উত্তার পানি নাম একটা স্বল্প সমতল জায়গায়। এখানে আমরা ১০ মিনিট জিরিয়ে কিছু বিস্কুট আর জল খেয়ে নিলাম। এখান থেকে আচালে আরো ২ কিঃমিঃ পথ। আবার চোরাই ভাঙা শুরু হলো। আবার ঘন জঙ্গল। তবে এইবার আর কাদা নেই, শুধুই শুক্নো পাতা বিছানো। কিন্তু যেই Trail এ নামি, তখনই আবার কাদা শুরু! খানিক চলার পর একটা লেখা বোর্ড চোখে পড়লো, আচালে ১০০ মিটার।  খুব  স্বস্তি পেলাম দেখে। কিন্তু হেঁটেই চলেছি আর হেঁটেই চলেছি, ১০০ মিটার আর শেষ হবার নাম নেই! ২:২৫ মিনিটে ওই ১০০ মিটারের বোর্ড দেখেছি। পথে কিছু বুরাস বা Rhododendron ফুলের গাছ চোখে পড়ছে।  অল্প স্বল্প ফুল ও ফুটেছে! অবশেষে ২:৪০ এ আমরা একে একে পৌঁছে গেলাম আচালে টপ। প্রথম দিনের হাঁটা অধিকাংশ ট্রেকারের ই একটু বেশি শ্রমদায়ক মনে হয়।  তাই পৌঁছে গিয়ে একটু বেশিই আনন্দ পাওয়া যায়।  তবে আকাশ ঠিক পরিচ্ছন্ন নয়। অনেকাংশেই মেঘ করেছে।  নিমা জি তাঁবু ফেলতে শুরু করে দিয়েছেন।  আমরা হাতে হাত লাগিয়ে কাজটা তাড়াতাড়ি করে ফেললাম। দুটো উন্নত মানের North Face এর  হলুদ রঙের তাঁবুতে থাকবো আমরা। আরেকটা Kitchen Tent লাগানো হয়েছে। বেলা  ৪ টের সময় গরম চা খেয়ে শরীর মন জুড়িয়ে গেলো।  তারপর Noodles দিয়ে পেটের আগুন নেভানো হলো। বিকালে দেখলাম দেশি মুরগি ধোয়া হচ্ছে রান্নার তাঁবুর বাইরে।  রাত্রে তারমানে Chicken হবে। আমাদের একজন Yak man আমাদের থেকে একটা জলের বোতল চেয়ে নিয়ে গেল। কারণ জিজ্ঞাসা করায় বললো দুধ আন্তে যাবে। আমরা বললাম এখান থেকে গ্রাম তো অনেক দূর! ও বললো ওর একটা Yak এর থেকেই দুইয়ে নিয়ে আসবে! বাঃ রে ভাই, মাল ও টানে আবার দুধ ও দেয়! বিকালে একটু এদিক ওদিক ঘুরে এলাম। Clince  নামের একজন কেরালার যুবক researcher এর সাথে আলাপ হলো। তিনি স্থানীয় পাখি দের দ্বারা কিভাবে ফুলের পরাগ মিলন হয় সেই বিষয় নিয়ে Research করছেন। অনেক গল্প হলো আর আমরা তাকে বর্ধমানের মুড়ি খাওয়ালাম। বিকালে এক ঝলক কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিললেও, আবহাওয়া সন্ধ্যায় কুয়াশাচ্ছন্ন হতে শুরু করে।  রাত্রে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও পরে।  আমরা তাড়াতাড়ি খাওয়া সেরে sleeping bag এ সিদোলাম। সকাল সকাল উঠতে হবে।

সকালের গরম চা আর Backdrop এ উত্তারে গ্রাম 

Trek শুরু হবার আগে একটা Group ছবি 

গুম্ফা দারা 

তেনজিং হিলারী পার্ক 

তেনজিং হিলারী মূর্তির সামনে 

তেনজিং হিলারী পার্ক এর উপর থেকে দৃশ্য 

তেনজিং হিলারী পার্ক এর পরের পথ 

বিশালকায় গাছের ফোকোর 

আচালে তে আমাদের তাঁবু 

আচালে তে আমাদের Kitchen Tent 

আচালের বিকেল 

বিকেলে একবার দেখা গেল কাঞ্চনজঙ্ঘা কে 





২৪-০৪-২০১৯:

সকাল ৫টা নাগাদ ঘুম ভেঙে গেলো। তাঁবুর বাইরে  আসতেই দেখলাম আবহাওয়া পরিষ্কার। ভালো ভাবেই দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা কে। পাহাড়ের ডান দিক থেকে সূর্যের আলো পড়ছে তার উপরে। সোনালী আভা প্রতিফলিত হচ্ছে তুষার শুভ্র পর্বত গাত্রে। এই সুযোগে কিছু ছবি তুলে নিয়ে চলে গেলাম প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে। এসে মুখ ধুইয়ে দেখলাম চা তৈরী। এদিকে প্রাতরাশ ও তৈরী করা চলছে। সকাল ৭:৩০ এ খাবার লাগিয়ে দেওয়া হলো। পুরি, আলুর তরকারি, আচার দিয়ে দারুন Breakfast সারা হলো। এবার বেরিয়ে পড়তে হবে।  আজকের গন্তব্য কালিঝার।  ৮:৩০ নাগাদ আমরা আচালে থেকে হাঁটা শুরু করে দিলাম। শুরুর দিকে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে খানিকটা উথরাই পথ। পথ বলতে জঙ্গলের ভিতর যেন লম্বা পরিখা কাটা আর তার ভিতর দিয়েই চলতে হয়। খানিকটা যাবার পর পথ বেশ সহজ ভাবেই চললো।  আরামসে হাঁটতে থাকলাম সকলেই। একটু পরেই হাঙ্গেপানি বলে একটা জায়গা পার হলাম। মাঝে মাঝে আল্প্ চড়াই ভাঙতে হচ্ছে। রাস্তায় চলতে চলতে পাহাড়ি চম্পা (Magnolia) ফুলের একটা বিরাট পাপড়ি পেলাম। পাহাড়ে সবকিছুই যেন একটু বড় বড়! পথের কোথাও আবার Rhododendron এর লাল পাপড়ির Carpet বিছানো। গাছেও অনেক গুরাস ফুটে আছে। অসাধারণ সে পথের অভিজ্ঞতা! এখানে রেড প্যান্ডা (RED PANDA) দের দেখতে পাওয়াযায় ভাগ্য সুপ্রশন্য থাকলে।

চলতে চলতে ১০টা বাজার কিছু আগে আমরা পৌঁছে গেলাম 'থুলোধাপ' নামের একটি অসাধারণ সুন্দর বুগিয়ালে। স্থানীয় ভাষায় থুলো মানে বড়ো আর ধাপ মানে সমতল জায়গা।  সত্যি বিশাল এক সমতল স্থান এই থুলোধাপ। জায়গা টা দেখে খুব ইচ্ছা করছিলো ওখানেই থেকে যাই! ওখানে বন্য বরাহ রা জায়গায় জায়গায় দাঁত দিয়ে মাটি খুঁড়ে বড়ো বড়ো গর্ত বানিয়ে রেখেছে দেখলাম। কিছুক্ষন এখানে দাঁড়িয়ে আবার হাঁটা শুরু হলো। এবার রাস্তা পুরো চড়াই। থুলো ধাপ এর পরেই শুরু  হয়ে গেলো চড়াই পথ। এক ভাবে চলতে থাকলাম মৃদুমন্দ গতি তে। অন্ধকার ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে পাথুরে  চড়াই পথ। কোথাও কোথাও কাদা আর প্রায় বেশিরভাগ স্থানেই বিছিয়ে আছে শুকনো পাতার পড়ত। ১০টায় থুলো ধাপ থেকে রওনা দিয়ে বেলা ১১:২০ নাগাদ ছিপ্ছিপে নামক একটা জায়গায় উঠে এলাম। নিমা জি সেখানেই অপেক্ষা করছিলেন। আর কতদূর জিজ্ঞেস করতে বললেন আর ১.৫কিঃমিঃ গেলেই কালিঝার। খিদেও পেয়েছে! একটা Chocolate Bar খেয়ে একটু ইন্ধন দিলাম শরীরে, আর মনে মনে বললাম এই জ্বালানি তাই কালিঝার পৌঁছতে হবে!☺️  চলতে চলতে একটা অসাধারণ সুগন্ধী ছোট ফুল চোখে পড়লো। গাঢ় আর হালকা গোলাপী রঙের মিশ্রনের সেই ফুলের নাম আমার জানা নেই। কারোর জানা থাকলে জানাবেন। ছবি নিচে দিয়ে দেবো। আবার চলতে থাকলাম। খানিকটা গিয়ে কয়েকজন SSB জওয়ান এর সাথে দেখা হলো। ওনারা জানালেন আমি কালিঝার এসে গেছি। শুনে মনটা জুড়িয়ে গেলো। আজকের মতো চড়াই ভাঙার ঈতি। ওনাদের আরেকটা প্রশ্ন ছিল যে আমরা কেন এরকম কষ্ট করে পাহাড়ে হাঁটতে আসি। এর উত্তরে আমি বললাম পাহাড় কে ভালোবাসি তাই আসি! যদিও উত্তর টায় ওনারা একটু অবাক ই হয়েছিলেন। কালিঝার ঢুকলাম বেলা ১২টা নাগাদ। গিয়েই ঘামে ভেজা জামা টা পাল্টে ফেললাম। যেটা না করার ভুল টি করে অনেক ট্রেকার তাদের ট্রেক মাটি করে। কালিঝার জায়গা তও বেশ সুন্দর। কালিঝার  এর ঠিক পাশেই ফোকটে দারা।

আমি আর ইন্দ্র সবার আগেই চলে এসেছি। তখনও জো গুলোও আসেনি! আরেকটি দল কে আচালে থেকেই দেখছি। তাদের মালপত্র এসে গেছে। আমরা বসে অপেক্ষা করতে থাকলাম বাকি দের। এদিকে ঘন কুয়াশার চাদরে গোটা উপত্যকা টি ঢেকে যাচ্ছে বার বার। যাই হোক, কিছুক্ষন এর মধ্যেই একে একে সবাই চলে এলো। তাঁবু লাগানোর কাজ শুরু করলাম তাড়াতাড়ি।  খিদেও পেয়েছে তেমন! Chocolate দিয়ে আর চলছে না! কিছু ভারী খাবার খেতে হবে। ওদিকে Kitchen Tent টাও খাটিয়ে ফেলেছেন নিমা জি রা।  কিছুক্ষনের মধ্যেই Noodles তৈরী হয়ে গেলো। তারপর চা। বাইরে কিছুই বলো করে দেখা যাচ্ছে না। শুধুই সাদা মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছে সবকিছু। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও পড়ছে মাঝে মাঝে! তাই আর বাইরে না থেকে, তাঁবুর ভিতরে তাসের আসর বসলো। রাত্রে রান্না হলো ডাল, ভাত, আলু সেদ্ধ আর ডিমের কারি। খাবার সময়ই দেখলাম আকাশ একেবারে ঝকঝক করছে! তাঁবু আর রাতের তারাভরা আকাশের কয়েকটা ছবি নেবার চেষ্টা করলাম। তারপর সোজা Sleeping Bag এর ভিতর ঢুকে পড়লাম।


আচালে থেকে সকালের কাঞ্চনজঙ্ঘা


আচালে থেকে সকালের কাঞ্চনজঙ্ঘা


আচালে Camp 



পাহাড়ি চাঁপা ফুলের পাপড়ি


থুলো ধাপ (Click for 360 Degree view)


সুগন্ধি পাহাড়ি ফুল (নাম জানতে চাই)


কালিঝার Camp এ আমাদের তাঁবু



কালিঝার এর রাত 



২৫-০৪-২০১৯:

সকালে তাঁবুর Zip নামাতেই দেখি পুরো কাঞ্চনজঙ্ঘা পরিবার সকালের রাঙা রোদে স্নান করছে! বাঁ দিক থেকে কুম্ভকর্ণ, কোকতাং, রাথঙ থেকে শুরু করে মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘা ডান পাশে পান্ডিম এবং তিয়েনচেন খাং , সব একেবারে পরিষ্কার ভাবে দৃশ্যমান। ছবি তুললাম  বেশ কিছু আর Video করলাম। একটু পরেই Breakfast তৈরী হয়ে গেলো। ঘী দিয়ে নরম ফেনা ভাত, আলু সেদ্ধ আর ডিম্ সেদ্ধ। আহা হা হা! কি দারুণ যে খেলাম, কি আর বলবো! হাঁটা শুরুর আগের আদর্শ খাবার। অনেক Energy দেবে আজ চলার পথে! গোছগাছ করে হাঁটা শুরু করলাম ৮:৪৫ তে। আজ সিঙ্গালি লা Top টপ্কে ফালুট যাবো আমরা। মৃদুমন্দ চড়াই পথে চলতে শুরু করলাম। পথের বেশ কিছু অংশই নেপাল ভারত মিলে গেছে। অনেক টা দূর থেকেই সিঙ্গালি লা Top টি দেখা যাচ্ছিলো। সহজেই হাঁটতে হাঁটতে শেষের দিকে অল্প খানিকটা চড়াই ভেঙে সকাল ১০টা নাগাদ আমরা পৌঁছে গেলাম সিঙ্গালি লা টপ। সেখানে পাথর দিয়ে একটা স্তুপ মতো বানানো রয়েছে আর বৌদ্ধ প্রার্থনা পতাকা থাংকা লাগানো আছে। সান্তনু দার আনা চন্দননগরের জলভরা তালশাঁস সন্দেশ দিয়ে পুজো নিবেদন করা হলো ঈশ্বরের উদ্যেশ্যে। কিছুক্ষন সেখানে সময় কাটিয়ে আবার চলা শুরু হলো আমাদের। এবার অনেকটাই উৎড়াই নেমে যেতে হবে আমাদের। তরিফুলে নামের একটা জায়গার পর থেকে আবার চড়াই শুরু হলো আল্প্ আল্প্। তরিফুলে তে SSB Camp রয়েছে।  সেটিকে বাঁ পাসে রেখে এগিয়ে চললাম আমরা। এবারের রাস্তা অনেকটাই সহজ। তরিফুলে এলাকা টি তে অনেকটাই বুগিয়াল পাওয়া গেলো। বুগিয়াল এর শেষে আমাদের পথে পড়লো এক পাল Yak , যাদের রাস্তা থেকে সর্বার কোনো ইচ্ছাই দেখা গেলো না! আমরা কোনো রকমে তাদের পাস কাটিয়ে আবার হালকা চড়াই চড়তে শুরু করলাম। এরপর খানিকটা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়ার পরেই সিকিমের সীমানা তে এসে পড়লাম। সেরকম সীমানা কিছুই দেখানো নেই, শুধু বাংলা তে ঢোকার সাথে সাথে হাঁটার রাস্তা টা কংক্রিটে বাঁধানো হয়ে গেলো! সেই বাঁধানো রাস্তা ধরে কিছুক্ষন হেঁটে ঠিক বেলা ১ টার সময় আমরা পৌঁছে গেলাম ফালুট এ। কালিঝার থেকে ফালুট পৌঁছতে সময় লাগলো প্রায় ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট। Trekkers Hut এ ঢুকে চারিদিক দেখে নিলাম। ২০০৫ সালে প্রথম এসেছিলাম এই ফ্লুট এ।  এত বছর পর পার্থক্য সামান্যই দেখলাম। কিছু video তুলে গায়ের ভিজে জামা তা পাল্টে ফেললাম। বাইরে এদিকে মেঘ রোডের খেলা চলছে। তাড়াতাড়ি একটু চা এর ব্যবস্থা করা হলো। লাঞ্চ এ ভ্যাট আর একটা তরকারি খাওয়া হলো।  পাশেই SSB জওয়ান দের থাকার ঘর। সেখানে একবার ঘুরে এলাম। বিকালের দিকে প্রচন্ড শিলা বৃষ্টি শুরু হলো। সেও এক দেখার মতো দৃশ্য! সন্ধ্যায় তেল, চানাচুড় সহকারে মুড়ি মাখা হলো, আর বসলো তাসের আসর। সাথে গান গাওয়া আর গল্প। রাত্রে রুটি আর তরকারি খেয়ে বাইরে এসে দেখলাম তারায় তারায় ভরে আছে সমস্ত আকাশ। সেই দৃশ্য দেখে ঘরে ঢুকলাম। শুয়ে পড়লাম কম্বল নিয়ে।  সকালে উঠে ফালুট টপ এ যেতে হবে।
কালিঝার এ সকালে Tent এর Zip নামাতেই এই দৃশ্য 

কালিঝার থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গ শ্রেণী 

কালিঝার Camping area 


মালবাহী 'জো' 

সিঙ্গালিলা টপ এ আমরা সবাই 

সিঙ্গালিলা টপ থেকে 

সিঙ্গালিলা টপ

তরিফুলে Camping area 

তরিফুলে তে বুগিয়াল 

রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে Yak এর দল 

তরিফুলে 

ফালুট GTA Trekkers Hut 

ফালুট GTA Trekkers Hut এর ভিতর 




২৬-০৪-২০১৯:

সাকলে ঘুম ভাঙতে প্রায় ৬ টা বেজে গেলো! দেরি হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি করে Tripod আর Camera নিয়ে জুতো আর Jacket তা পরেই দৌড়লাম ফালুট টপ এর দিকে। সোনার ঝলকানি miss করে ফেলেছি! তবে হলদে রূপালী আভা এখনও রয়েছে। বাঁ দিক থেকে নেপালের সাগরমাথা পর্বত শ্রেণী থেকে শুরু করে সামনের কাঞ্চনজঙ্ঘা শিখর রাজি সমূহ পরিচ্ছন্ন ভাবে দৃশ্যমান। প্রাণ ভোরে ছবি তুললাম আর তার থেকেও বেশি প্রাণ ভোরে চোখে দেখলাম আর বিশুদ্ধ বাতাস নিলাম বুক ভোরে। অনেক্ষন সময় কাটালাম Top এ আমি , মাধব আর তীর্থ। তীর্থ তো স্থান মাহাত্বে একটা অসাধারণ কবিতাও লিখে ফেললো ওখানে বসেই! এবার নিচে নামতে হবে। ৭:৪৫ নাগাদ পর্বতশৃঙ্গ গুলিকে আবার দেখা হবে বলে বিদায় জানিয়ে ফেরার পথ ধরলাম। Hut এ ফায়ার দেখি Breakfast তৈরী। রুটি আর তরকারি আর চা খেয়ে নিলাম।  জিনিস পত্র গুছিয়ে আবার বেরিয়ে পড়তে হবে পথে। আজ আমাদের গোর্খে নেমে যেতে হবে। ৯ টা নাগাদ ফালুট ছেড়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। আজ রাস্তা সহজ। আর চড়াই নেই। সুন্দর রডোডেনড্রন এর ফুলে ভরা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে পথ। হাঁটি, ছবি তুলি , গল্প করি - এই ভাবে এগোতে থাকলাম। খানিক পরে শুরু হলো সরু বাঁশের জঙ্গল। আবার মনে আশা যদি RED PANDA চোখে পরে! পথে সান্তনু দা flask এর গরম জলে সুগন্ধি দার্জিলিং চা বানিয়ে আমাদের খাওয়ালো। দারুন সময় কাটছে আজ। রাস্তায় আলুবাড়ি নামের একটা জায়গায় নতুন Trekkers Hut তৈরী হতে দেখলাম। পরবর্তি সময়ে যারা যাবেন, তারা এখানে থাকতে পারেন। পথে চলতে চলতে কোথাও কোথাও মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে। অনেক টা নেমে এসে দূরে দেখা গেলো সামানদেন গ্রাম। তার মানে গোর্খে আর বেশি দূর নয়। রাস্তার পশে গাছের গুঁড়ি তে হয়ে থাকা সুগন্ধি Orchid কিছুক্ষন দাঁড়াতে বাধ্য করলো। আবার চলতে থাকলাম। নিচের থেকে পাহাড়ি রাম্মাম নদীর শব্দ কানে আসছে! পা চালালাম। বেলা ১২:৪০ নাগাদ পৌঁছে গেলাম  গোর্খে গ্রামে। অসাধারণ সুন্দর একটি পাহাড়ি গ্রাম গোর্খে। পাস দিয়ে রাম্মাম যদি বয়ে চলেছে। আমাদের গোর্খে তে GTA Trekkers Hut আগে থেকেই Booking করাই ছিলো। একটা পুরো Dormitory তে সবাই মিলে ঢুকে পড়লাম। দলের কয়েকজন রাম্মাম নদীর একটি উপনদী তে স্নান করতে গেলো। ভালো করে স্নান সেরে খেতে বসে গেলাম। ভাত, দল, তরকারি, ডিম ভাজা দিয়ে পেট পুরে খেলাম। আজ আর আগামী কাল আমরা গোর্খে তাই কাটাবো। এখানে প্রচুর পাখি দেখাযায়।  আমরা কিছু ছবি ও তুললাম তাদের। এদিক ওদিক ঘুরে ছবি তুলে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এলো। আবার তাসের আড্ডা আর মুড়ি মাখা। রাত্রে ভ্যাট, ডাল , তরকারি খেয়ে লম্বা হলাম।


ফালুট টপ এর একটু আগে 

ফালুট টপ এর কাছে 


ফালুট টপ 

সাগরমাথা শৃঙ্গ রাজি বা Everest Range 

শায়িত বুদ্ধ 










চা বিরতি 



সুগন্ধি Orchid 

গোরখে গ্রাম 

গোরখে তে সাধারণ জীবন 

গোরখে GTA Trekkers Hut 

গোরখে GTA Trekkers Hut 

গোরখের ছোটো নদী তে স্নান 

Hoopie 

Black Drongo 

Spotted Dove 





গোরখে GTA Trekkers Hut

গোরখে GTA Trekkers Hut এর ওপরের দিকের জঙ্গল 

সন্ধ্যায় তাসের আড্ডা 




২৭-০৪-২০১৯:

সকালে উঠেই মন টা খারাপ হয়ে গেলো! কারণ আকাশের মুখ ভার।  রাট ৩ টে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তার জেরে এখনও চারিদিক ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন। সারাদিনের অনেক পরিকল্পনা ছিল আজ। সব ভেস্তে গেলো! টুকটাক এদিক সেদিক একটু ঘুরে বেড়ালাম। বেশি দূর অবধি দেখাও যায় না! জঙ্গলে ঢুকে ঘুরে এলাম খানিক্ষন। সারাদিন খেয়ে বসেই প্রায় কেটে গেলো! যাই হোক, কি আর করা যাবে! সবই প্রকৃতির ইচ্ছা। আড্ডা, গল্প আর এটা সেটা খেয়ে কেটে গেলো দিন টা।

শুধুই ঘন কুয়াশা 

সব ঘোলাটে 




২৮-০৪-২০১৯:

আজ সকালে আকাশ পরিষ্কার। সকাল সকাল Breakfast সেরে নিয়ে ৮:১৫ নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম আমাদের ট্রেক এর শেষ গন্তব্য শ্রী খোলার উদ্যেশ্যে। গোর্খে থেকে উপরের দিকে ১ কিঃমিঃ মতো আসতেই পৌঁছলাম সামানদেন গ্রাম এ। এটিও একটি অসামান্য সুন্দর ছবির মতো সাজানো পাহাড়ি গ্রাম। কেউ এই পথে এলে অবশ্যই এই গ্রামে একটি দিন থাকবেন! আমরা থাকতে পারিনি কারণ হাতে সময় অকুলান ছিলো। সামানদেন থেকে অল্প উথরাই পথ নেমে গেছে। সেই পথ ধরে বেশ দ্রুত গতি তাই চলতে থাকলাম সকলে। খানিক তা গিয়ে একটি পাহাড়ি নালা পার হয়ে পথ আবার চড়াই।  সেই চড়াই পথ গিয়ে শেষ হলো সোজা রাম্মাম গ্রাম। রাম্মাম এ ঢুকতেই একটি বড়সড়ো সারমেয় লেজ নাড়তে নাড়তে আমাদের স্বাগত জানাতে কাছে চলে এলো! রাম্মাম এ গিয়ে একটা ছোট চালাঘরের উঠোনে বসে ভুট্টা  পোড়া আর কফি খেয়ে একটু বিশ্রাম নেওয়া হলো। খুব একটা তারা নেই আমাদের। শ্রী খোলা তেও GTA Hut Booking করেই রেখেছিলাম আমরা। খানিকক্ষন বসে আবার হাত শুরু করলাম।  দেখলাম রাম্মাম অবধি Electric Supply এর গাড়ি গেছে। অর্থাৎ অদূর ভবিষ্যতে Tourist রা খুব সহজেই গিয়ে এই সমস্ত সুন্দর গ্রাম গুলি কে নোংরা করার সুযোগ পাবেন!  আমরা এগোতে থাকলাম গ্রামের ভিতর দিয়েই।  এবার আর বিচ্ছিন্ন জঙ্গল নয়, গ্রাম এর মধ্যে দিয়েই রাস্তা। মাঝে মাঝেই রাস্তার পাসে ঘর বাড়ি চোখে পড়ছে। উথরাই নামতে নামতে একটি প্রজাপতির ছবি তুলতে প্রায় ১০ মিনিট সময় কাটলো আমার! এই ভাবেই চলতে চলতে ১২:৪৫ নাগাদ আমরা Hut এর সামনে চলে এলাম। ভিতরে ঢুকে দেখলাম অবস্থা খুবই শোচনীয়। বিশেষ করে টয়লেট এর অবস্থা তা আর বলার মতোই নয়। এর একটি প্রধান কারণ যিনি ওখানের Care Taker , তার নিজের একটি হোটেল তৈরী হয়েছে ৫০ পা উপরেই। স্বভাবতই তিনি চাইবেন তার হোটেলেই সবাই আসুক, GTA তে নয়! সে যাই হোক, উপরের  ঘর গুলি এখনো ভালোই রয়েছে। নিচের ঘর গুলি আর ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। জানিনা পরবর্তী কালে সেগুলো আদৌ মেরামত করা হবে কি না! আমরা ৬ জন ওপরের গোটা Dormitory টায় আরাম সে থেকে গেলাম। স্নান করে ওই Care Taker এর হোটেলেই খেতে গেলাম। ভাত,  ডাল, সয়াবিনের তরকারি, পাঁপড় আর আচার দিয়ে দারুণ আয়োজন। খেয়ে দিয়ে নদীবক্ষে খানিক সময় কাটালাম। বিকালে একজন গাড়ি চালকের সাথে কথা বলে নিলাম আগামী কাল আমাদের NJP পোঁছে দেবার জন্য। নিমা জি সন্ধ্যায় আমাদের দলের সকল কে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানিত করলেন! আমরাও ওনার গাইড হিসাবে অসাধারণ কর্মক্ষমতার জন্য সাধুবাদ জ্ঞাপন করলাম। পাহাড়ে গেলে কত নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয়  হয়, আর সেই পরিচয় আজীবন টিকে যায়। মন তা ভারী হয়ে গেলো, এই কদিনের সঙ্গী বিদায় নিয়ে চলে গেলো নিজের গ্রামে।


সামানদেন গ্রাম 


ছবির মতো সাজানো সামানদেন গ্রাম 



সামানদেন গ্রাম 

নামার পথে নালা 



রাম্মাম গ্রামের সারমেয় 

ভুট্টা পোড়া আর কফি 

রাম্মাম গ্রাম 

প্রকৃতির নিজের হাতে রং করা 

শ্রী খোলা GTA Trekkers Hut 

শ্রী খোলার পাড়ে পাথর সাজিয়ে সময় কাটানো 

শ্রী খোলা

শ্রী খোলার পাড়ে পাথর সাজিয়ে সময় কাটানো 



শ্রী খোলা GTA Trekkers Hut 



২৯-০৪-২০১৯:

আজ সকালে তাড়াতাড়ি উঠে Breakfast করে তৈরী হয়ে গেলাম। গাড়ির অপেক্ষা করতে করতে চলেও এলো। আর থাকা যাবে না! এবার বেরিয়ে পড়তে হবে। সকাল ৮:৩০ এ আমাদের গাড়ি ছাড়লো।  রিম্বিক হয়ে, মানেভঞ্জন হয়ে গাড়ি চললো NJP এর উদ্যেশ্যে। পাহাড়ি সরল সিধে মানুষ গুলো কে আর পাহাড়ি প্রকৃতি কে বিদায় জানিয়ে এগিয়ে চললাম সমতলের উদ্যেশ্যে। আবার দেখা হবে বন্ধু কোনো পাহাড়ি পথের বাঁকে।

শ্রী খোলা থেকে গাড়ি চললো NJP এর উদ্দেশ্যে।


পুনঃ : আমার এই বর্ণনার Vlog তৈরী করে আমার YouTube Channel এ দেওয়া রয়েছে। যদি কেউ দেখতে চান, তাহলে নিচের দেওয়া Link এ গিয়ে দেখতে পারেন। আশাকরি খুব খারাপ লাগবে না!

সিঙ্গালি লা TREK VLOG 



*****************X *****************


মাননীয় পাঠক-পাঠিকা, ধৈর্য ধরে আমার এই লেখা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। লেখা টি পরে কেমন লাগলো তা comment করে জানালে ভবিষ্যতে উন্নত ভাবে গল্প উপস্থাপন করতে সুবিধা হবে। আগামী গল্প গুলি পড়তে হলে  Blog এ চোখ রাখবেন।

ধন্যবাদান্তে,
বিশ্বরূপ।

প্রকৃতি কে ভালোবাসুন .. প্রকৃতি কে রক্ষা করুন ..

ধন্যবাদ